ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৫/২০২৪ ৬:৫৯ এএম

দিনভর গুমোট আবহাওয়া। মাঝেমধ্যে ঝোড়ো হাওয়া। থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই বদলে যায় সবকিছু। ফুঁসতে থাকে নদনদী। শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি। জলোচ্ছ্বাসে ডুবতে থাকে উপকূল। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগ গতকাল রোববার দুপুর থেকে উপকূল স্পর্শ করতে শুরু করে। পরে রাত পৌনে ৯টার দিকে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে বাগেরহাটের মোংলার কাছ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র আঘাত হানতে শুরু করে।

এ সময় গ্রামের পর গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে যায়। জোয়ারের অথৈ পানিতে ডুবেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। আগাম প্রস্তুতির কারণে প্রাণহানি কম হলেও জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে গবাদি পশু, মাছের ঘের ও ফসলি ক্ষেত। বাড়িঘর ও জনপদ ভাসছে নোনাপানিতে। ঝড়ের সময় উপড়ে গেছে গাছপালা। বিচ্ছিন্ন হয়েছে লাখো গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ। বিঘ্নিত হয়েছে মোবাইল ফোন-ইন্টারনেট সেবা। বিভিন্ন এলাকায় সড়কে গাছ পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পটুয়াখালীতে একজন পানিতে ডুবে মারা গেছেন। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মারা গেছেন এক বৃদ্ধ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপপরিচালক শামীম আহসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৯০ কিলোমিটার; যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল। ঘূর্ণিঝড়টির আকার প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। এর অগ্রভাগ গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে খুলনা উপকূলের কাছে সুন্দরবনের দিকে প্রবেশ করে। এর প্রভাবে উপকূলে ব্যাপক বৃষ্টি হয়।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ‌ বলেন, রোববার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের পর থেকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়ের ৭০ ভাগ বাংলাদেশ এবং ৩০ ভাগ পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে গেছে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, মোংলা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল দিয়ে সাতক্ষীরা ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর আইল্যান্ডের মাঝখান দিয়ে ঢুকেছে ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্রটি। মূল কেন্দ্রের ব্যাসার্ধ অনেক বড় থাকায় এটির প্রভাব আশপাশের এলাকাগুলোতেও পড়তে শুরু করেছে। আঘাতের সময় সাগরে ভাটা থাকায় তেমন বড় কোনো জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। ঝড়ের শেষ ভাগটি উপকূল অতিক্রম করার সময় সাগরে জোয়ার থাকার কারণে উপকূলীয় জেলাগুলোতে জলোচ্ছ্বাস বাড়বে।
গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হয়। গতকাল সকালে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর পাশাপাশি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়।

উপকূল পানির নিচে
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গতকাল বিকেল থেকে উপকূলের নদী, খালে পানি বাড়তে শুরু করে। রাত ১১টা পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। কিছু নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট বেশি পানি বাড়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিতে উপকূলীয় অঞ্চলের নদনদী উত্তাল হয়ে ওঠে। রিমালের সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গেছে বাগেরহাটের মোংলা ও সুন্দরবন এলাকায়। এবারও ঘূর্ণিঝড়ের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সুন্দরবন। রিমালের সঙ্গে টানা কয়েক ঘণ্টার যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাখো গাছ। অতি জোয়ারে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে; এতে বন্যপ্রাণীর প্রাণহানির শঙ্কা করছে বন বিভাগ। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে।

বাগেরহাটের প্রধান প্রধান নদনদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুণী জানান। তিনি বলেন, নদনদীর পানি দুই থেকে পাঁচ ফুট বেড়েছে। এদিকে সুন্দরবনের মিষ্টি পানির আধার শতাধিক পুকুর তলিয়ে গেছে নোনাপানিতে। ফলে প্রাণিকুল ও বনকর্মীর বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট তৈরি হতে পারে।
সুন্দরবনের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণিকুলের প্রাণহানির শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। দুর্যোগ চলে যাওয়ার পর প্রাণিকুলসহ অন্য ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ওসি আজাদ কবির বলেন, দুপুরের পর থেকে দমকা বাতাসের সঙ্গে পানিও বাড়তে শুরু করে। এ কারণে প্রজনন কেন্দ্রে থাকা বন্যপ্রাণী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের দুবলারচর জেলেপল্লি টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরেস্ট রেঞ্জার মো. খলিলুর রহমান জানান, বাতাস ও জোয়ারের তোড়ে দুবলা অফিসের জেটি উড়ে গেছে। কয়েকটি ট্রলার স্রোতে ভেসে গেছে। পুকুরের মধ্যে জোয়ারের লবণপানি ঢুকেছে।
বরগুনার আমতলীর বালিয়াতলী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। আমতলী ও তালতলীর ২৭ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া পোটকাখালী, বরইতলা, ডালভাঙ্গা, বাওয়ালকার বাইন চটকি, মাঝেরচর এলাকার চরাঞ্চল অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া উচ্চ জোয়ারের কারণে পায়রা ও বিষখালী নদীর ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বরগুনা সদর উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী এলাকার বাসিন্দা সাথী সুমাইয়া বলেন, জোয়ারের পানিতে আমাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। আজ থেকে আমাদের ঘরে কোনো রান্না হবে না। আমরা যারা বড়রা রয়েছি, তারা না খেয়ে থাকতে পারেন, কিন্তু আমার দুটো ছেলেমেয়ে আছে, ওদের নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় আছি। পাশাপাশি ভয়ও আছে। কারণ, আমাদের ঘরের চারপাশে প্রায় ২ থেকে ৩ ফুট পানি রয়েছে। এ পানিতে আমার ছেলেমেয়ে ডুবে যেতে পারে।

ভোলার দক্ষিণে চরফ্যাশনের কুকরীমুকরী, ঢালচর, মুজিবনগর ইউনিয়নসহ ৭৪টি চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ জোয়ার ও ঘূর্ণিঝড়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চরফ্যাশনের কুকরীমুকরী ইউনিয়নের চর পাতিলার বাসিন্দা মোহাম্মদ আল-আমিন মাতব্বর বলেন, ঝড়, বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসে চর পাতিলার সব ঘরে পানি ওঠে। এতে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও মসজিদ ডুবে যায়। কুকরীমুকরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, চর পাতিলার চারদিকে কোনো বেড়িবাঁধ নেই। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ প্লাবিত হয়। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে চরে বুকসমান পানি উঠেছে, এতে চরের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বন্দি হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের উপকূলীয় এলাকা পতেঙ্গার আকমল আলী সড়কের জেলেপাড়াটি বরাবরের মতো ডুবেছে জোয়ারের পানিতে। এখানকার প্রায় ৩০০ ঘরে জোয়ারের পানি ঢুকে। জেলেপাড়ার সরদার হরিদাস বলেন, জোয়ারের পানি ঢুকে সব তলিয়ে যায়। জাল এবং জিনিসপত্র আগেই সরিয়ে নেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কক্সবাজারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সদর উপজেলার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরাটেক, কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নুনিয়াছটাসহ অন্তত ২১টি গ্রাম।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর ২০ গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ নয়ার চর এলাকায় গ্রাম রক্ষা বাঁধ অতিক্রম করে গ্রামে পানি ঢুকেছে। এতে ববাজার, নয়ারচর, দক্ষিণ চরমোন্তাজ, উত্তর চরমোন্তাজ, মোল্লাগ্রাম ও চর আণ্ডাসহ ২০ গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

পিরোজপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় পানির উচ্চতা দুই থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তুলনামূলক নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ১৩টি বসতবাড়ি। রোববার বিকেলে স্বাভাবিকের তুলনায় পানির উচ্চতা বাড়লে উপজেলার কলবাড়ী জেলেপাড়া তলিয়ে যায়।

নোয়াখালীর হাতিয়ায় টানা বর্ষণ ও জোয়ারে পানিতে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ার চারপাশে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১০ ফুট পানি বেড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৯ ওয়ার্ডের ৫০ হাজার মানুষ। কক্সবাজারের মহেশখালীর চারটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ ও হিজলার চারদিকে মেঘনা ও তার শাখা নদী। হিজলার সংবাদকর্মী দেলোয়ার হোসেন জানানা, চরাঞ্চল ২-৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

বাগেরহাটের মোংলায় যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবে গেছে। রোববার সকালে মোংলা নদীর ঘাটে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার কারণে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারটিতে ৫০ থেকে ৬০ জন যাত্রী ছিলেন। তবে স্থানীয় ট্রলার মাঝি ও অন্যান্য যাত্রীরা নদীতে পড়ে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন।

পটুয়াখালীর গলাচিপার চর কারফারমা, চর বাংলা, চর নজির, চর মহিউদ্দিন, চর মায়া, চর ওহাবসহ, পৌরসভার নতুন বাজার, আড়তপট্টি, তালেবনগর ও কলাবাগানে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বেড়েছে। এতে ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে উপকূলীয় রক্ষা বাঁধে দেখা দিয়েছে ভাঙন। উত্তাল কচা নদীর সাঈদখালী এলাকার সাঈদখালী বাজারের পূর্ব পাশের বেড়িবাঁধে এ ভাঙন দেখা দেয়।

ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে দুই থেকে আড়াই ফুট উঁচু দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপের চারপাশে সাগরের পানির উচ্চতা আগের চেয়ে ৪-৫ ফুট বেড়েছে। বাঁধ না থাকায় দ্বীপ দুটিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের সোরা এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ রক্ষায় নির্মিত রিং বাঁধটি ভেঙে গেছে।

দু’জনের মৃত্যু
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় গতকাল দুপুরে উচ্চ জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে মো. শরীফুল ইসলাম (২৪) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্রের সিঁড়িতে ওঠার সময় পড়ে মারা গেছেন শওকত আলী মোড়ল (৭২) নামের এক বৃদ্ধ। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ১০০ নম্বর নাপিতখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাইক্লোন শেল্টারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিমানবন্দর বন্ধ, বাতিল ৩৫ ফ্লাইট
চট্টগ্রামের শাহ আমানত, কক্সবাজার ও বরিশাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের গতকালের ৩৫টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। কর্মকর্তারা জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৬টা থেকে আগামীকাল সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বিমানবন্দর থেকে এসব ফ্লাইট গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বন্ধ রয়েছে ফেরি-লঞ্চসহ সব রকম নৌযান চলাচল। উপকূলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করায় বন্ধ আছে শ্রেণি কার্যক্রম। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, পায়রা ও মোংলা বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভারতে ৩৪০টি অভ্যন্তরীণ এবং ৫৪টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করেছে দেশটির বিমান সংস্থা।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মুহিবুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ে এখনও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাযনি। তবে উপকূলের অনেক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আগে থেকে প্রস্তুতি ছিল বলেই মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৮ লাখ মানুষ উঠেছেন। সেখানে খাদ্য, চিকিৎসাসহ সব ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু ঝড় মোকাবিলা নয়, ঝড়ের পর দুর্গত মানুষের সহায়তায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রস্তুত আছেন।

পাঠকের মতামত

ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে ঢুকতে বিধিনিষেধ

ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশে বিধিনিষেধসহ ১০টি নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সরকারি ও বেসরকারি ...

আমাদের নিয়ত সহিহ, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার হলেই নির্বাচন: সিইসি

অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন নতুন নির্বাচন কমিশনার ...